বামসি বে ছিলেন অটোমান সাম্রাজ্যের স্বপ্নদ্রষ্টা আর্তগ্রুল বে কাছের বন্ধু, সহযোদ্ধা সমর্থক এবং অটোমান সাম্রাজ্যের সূচনা লগ্নে অবদান রাখা বিশেষ ব্যক্তিদের একজন। আর্তগ্রুল গাজীর সুখে-দুখে বিপদে-আপদে যিনি ছায়ার মতো পাশে ছিলেন।
বোকাসোকা স্বভাবের বামসি বেরেক যুদ্ধক্ষেত্রে মোটেই বোকা ছিলেন না। দুই হাতে তলোয়ার চালানোর এক বিশেষ দক্ষতা ছিল এই মহান কায়ী বীরের। বিখ্যাত এই মহান বীরের জন্ম ১১৮৭ সালে। তাঁর জন্মের বছরেই তার বাবা আটলুগ গাজী মৃত্যুবরণ করেন। ইতিহাসে তার মায়ের নাম অজানা থেকে যায়। তার বাবার মৃত্যুর পর তিনি আর্তগ্রুল গাজীর বাবা-মার কাছে লালিত পালিত হন। তারা এই কিংবদন্তীর রাখেন বামসি বেরেক। তিনি পাহাড়ি ভাল্লুক নামেও পরিচিত ছিলেন। অঘুজ তুর্কিদের বিখ্যত মহাকাব্য “দের্দে কুরকুত” বইয়ে তাঁর জীবনবৃত্তান্ত পাওয়া যায়।
বামসি বেরেক ছিলেন তুরগুত, আব্দুর রহমান এবং আর্তগ্রুলের বড় ভাইয়ের মত। তার বয়স যখন চার মহান আর্তগ্রুল বে তখন জন্মগ্রহণ করেন এবং যখন তার বয়স ২২ ও ২৩ বছর তখন যথাক্রমে আব্দুর রহমান এবং তুরগুত আল্পের জন্ম হয়েছিল। দিরিলিস সিরিজে বন্ধু দোগানের সাথে তাঁর মজার কথোপকথন বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ করছিল।
তার স্ত্রীর নাম হাফসা হাতুন, যিনি পূর্বে হেলেনা নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি বিয়ের সময় খ্রিস্টান থেকে মুসলিম হয়ে হাফসা নাম ধারণ করেন। দিরিলিস আর্তগ্রুল সিরিজে বামসিকে তাঁর বন্ধুরা বিয়ে করতে বললেই তিনি ক্ষেপে যেতেন, আর তাঁর দুই তোলোয়ার দেখিয়ে বলতেন তিনি তোলয়ারকে বিয়ে করছেন এবং তিনি আর বিয়ে করবেন না, অথচ এই পাগলাটে বামসিও একদিন প্রেমে পড়ে। তাঁর প্রেমে পড়ার দৃশ্যটা সিরিজ টা পুরোটা জমিয়ে দিয়েছিল। বেমসি বের আসলিহান নামের একটি মেয়ে এবং আয়বাস নামের একটি ছেলে ছিল। এই দুজন ছাড়াও তার আরোও দুইটি পালক পুত্র ছিল। যারা হলেন সিদ্দিক ও চেরকুতাই।
বামসি বেরেক ১২৪৫ থেকে ১৩১৫ পর্যন্ত কায়ী বসতীর একজন বে ছিলেন। তিনি কায়ী বসতির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১২৩৬ সালে সুলেমান শাহের মৃত্যুর পরে আর্তগ্রুলের বড় ভাই গুন্দারো বসতীর প্রধান হয়ে ১০০০ জন লোক নিয়ে মধ্য এশিয়ায় চলে যান, তখন বামসি বে ও ৪০০ লোক আর্তগ্রুলের সঙ্গী হয়ে সোগুত চলে যান। এইদিনকে কায়ী বসতি বিভক্তির দিন হিসেবে ধরা হয়। আর্তগ্রুলকে অন্ধের মত বিশ্বাস করতেন বলেই তিনি আর্তগ্রুলের সাথে থেকে গেছেন।
আর্তগ্রুল পুত্র ওসমানের বিশ্বস্ত বন্ধু ও পরামর্শদাতা হিসেবে তিনি সবসময় পাশে ছিলেন। যখন আর্তগ্রুলের ছোট ভাই দুন্দার ভারপ্রাপ্ত বে হিসেবে দায়িত্ব পান, তিনি অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এটা মেনে নিয়েছিলেন। কারণ, এটা আর্তগ্রুলের আদেশ ছিল। যখন ওসমান প্রধান বে হিসেবে দায়িত্ব পান তখন তিনি তার কাছে রেখে যাওয়া আর্তগ্রুলের নথিপত্র ওসমানকে হস্তান্তর করেন।
আর্তগ্রুলের সাথে কারচিসার দুর্গ জয় করা সহ ওসমানের সহযোদ্ধা হয়ে অসংখ্য যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। অটোমান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করার সময় তিনি ওসমান গাজী সামরিক কমান্ডার হয়েছিলেন। তাঁর কেমিক’লার নামের একটি সাদা ঘোড়া ছিল। ঘোড়াটি তার মৃত্যুর কিছুদিন আগেই মারা যায়। ১৩১৫ সালে ওসমান গাজী সঙ্গী হয়ে মঙ্গোলদের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে তিনি শহীদ হন। তাঁকে এরেনলির মাঝখানের কবরস্থ করা হয়।
সিরিজ তথ্য:
♦ দিরিলিস আর্তগ্রুলের সিজন ৩ এর ৭০ ভলিউমের তার বিয়ে হয়।
♦ কুরুলুস ওসমানের সিজন ২ এর ৬০ নং ভলিউমের তাঁর মৃত্যু দেখানো হয়।
♦ বামসি বেরেক চরিত্রে অভিনয় করছেন : Nurettin Sonmez.
দিরিলিস আর্তগ্রুল দেখার ও ডাউনলোড লিংক :
☪︎ দিরিলিস আর্তগ্রুল প্রথম সিজন
☪︎ দিরিলিস আর্তগ্রুল দ্বিতীয় সিজন
☪︎ দিরিলিস আর্তগ্রুল তৃতীয় সিজন
☪︎ দিরিলিস আর্তগ্রুল চতুর্থ সিজন
☪︎ দিরিলিস আর্তগ্রুল পঞ্চম সিজন
লিখা : এ মুহাম্মদ