১৩৯৬ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর দানিউব নদীর পাড়ে অবস্থিত বুলগেরীয় শহর নিকোপোলিসে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যা ইতিহাসে নিকোপোলিসের যুদ্ধ নামে পরিচিত। এটি ছিলো মধ্যযুগের সর্বশেষ বড় ক্রুসেড। এর এক পক্ষে ছিল উসমানীয় সাম্রাজ্য, এবং অন্য পক্ষে ছিল হাঙ্গেরি, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জার্মানি, এবং ৩ লাখের বেশী সংখ্যক খ্রিস্টান সৈন্যর দল সম্মিলিত আগমন করেন ইউরোপের অন্যান্য এলাকা থেকে। এই যুদ্ধ সংঘটিত হয় চতুর্দশ শতাব্দীর একেবারে শেষের দিকে।

হাঙ্গেরির সিংহাসনে সিগিসমুন্ড বসলে তিনি তৎকালীন তুরস্কের উসমানীয় বা অটোমান সুলতান বায়েজিদের অধীনে থাকা বুলগেরিয়া আক্রমণ করে দানিয়ুব নদীর অববাহিকায় অবস্থিত নিকোপোলিস নামক শহর দখল করে নেন। এই সংবাদে সুলতান বায়েজিদ একটি শক্তিশালী ওসমানীয় বাহিনী তাঁর বিরুদ্ধে পাঠালে সিগিসমুন্ড তাদের শক্তি বুঝে যুদ্ধ এড়িয়ে গিয়ে তখনকার মতো পশ্চাদপসরণ করেন। এরপর ওসমানীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে তিনি অপরাপর ইউরোপীয় রাজাদের কাছে সাহায্য চাইলে পোপ নবম বেনিফেস এগিয়ে আসেন।

ফ্রান্স,ইংল্যান্ড,লোম্বার্ডি,স্যাভয়,ব্যাভারিয়া,জার্মানি,হাঙ্গেরি,ওয়ালশিয়া,বোহেমিয়া,অস্ট্রিয়া এসব দেশগুলো পোপের আহবানে এগিয়ে আসে। তারা সম্মিলিত ভাবে উসমানীয়দের বিরুদ্ধে নিকোপোলিসে সমবেত হয়। ধর্ম যোদ্ধারা কোন প্রকার পুর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই উসমানীয়দের আক্রমণ করে। মাত্র তিন ঘন্টার যুদ্ধে সম্মিলিত বাহিনী বায়েজিদের কাছে পরাজিত হয়। সিগিসমুন্ড দানিয়ুব নদী পাড়ি দিয়ে হাঙ্গেরিতে চলে আসেন।

ছবি: সুলতান বায়েজিদ ও তার প্রতিপক্ষ

এটি ছিল মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় খ্রিস্টানদের সম্মিলিত সর্বশেষ ক্রুসেড। সে যুগে সমগ্র ইউরোপ একত্রিত হয়েও মুসলিমদের শুধুমাত্র তুর্কী অঞ্চলটির সাথেই পারতো না। দিল্লী সালতানাত, মিশরের মামলুক, মরক্কোর সালতানাত এদের কোন প্রকার সাহায্য ছাড়াই মুসলিমরা জয় লাভ করতো।

কিন্তু আজ পুরো মুসলিম বিশ্ব ক্ষুদ্র একটা ইজরাঈলের সাথেই পেরে উঠে না।

-কার্টেসি ফাতিহ সুলতান فاتح سلطان

Comment | মতামত জানান: